অনেকেই বলে থাকেন, ভেজা চুল নিয়ে ঘুমালে সর্দি-কাশি বা ঠান্ডা লেগে যায়। এটি এমন একটি প্রচলিত ধারণা যা প্রায়ই অভিভাবকদের কাছ থেকে শোনা যায়। কিন্তু এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কতটা সঠিক? আসুন, বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং গবেষণার আলোকে বিষয়টি বুঝে নেওয়া যাক।
ভেজা চুল ও সর্দির মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই
যুক্তরাষ্ট্রের মায়ো ক্লিনিক এবং সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (CDC) মতে, সর্দি হওয়ার প্রধান কারণ ভাইরাস সংক্রমণ। সর্দি-কাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা বা রাইনোভাইরাসের মতো ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়।
- কেন সর্দি হয়?
ভাইরাস সাধারণত নাক, মুখ বা চোখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এটি বাতাসে, সংস্পর্শে বা দূষিত জায়গায় হাত দেওয়ার মাধ্যমে ছড়ায়। - ভেজা চুলে ঘুমানোর সঙ্গে সর্দির সম্পর্ক:
ভেজা চুল থাকা সর্দির ঝুঁকি বাড়ায় না। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট “মেডিকেল নিউজ টুডে” এবং “হেলথলাইন” বলছে, ভেজা চুল ও সর্দির মধ্যে কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই।
তাহলে ঠান্ডা লাগার ধারণা কেন?
ঠান্ডা পরিবেশে ভেজা চুলে থাকলে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে যেতে পারে। এটি একটি অস্বস্তি তৈরি করতে পারে, তবে এটি সর্দির কারণ নয়।
ভেজা চুলে ঘুমানোর ঝুঁকি
যদিও ভেজা চুল সর্দির কারণ নয়, তবে এর কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে:
- ছত্রাক সংক্রমণ:
ভেজা চুল বালিশকে স্যাঁতসেঁতে করে তুলতে পারে, যা ছত্রাকের (যেমন ম্যালাসেজিয়া) প্রজননক্ষেত্র তৈরি করে। এটি মাথার ত্বকের সমস্যা যেমন সেবোরিক ডার্মাটাইটিস সৃষ্টি করতে পারে। - চুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া:
ভেজা অবস্থায় চুল দুর্বল থাকে, ফলে চুল ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। - ঘুমে অস্বস্তি:
ভেজা চুল ঠান্ডার কারণে শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়, যা ঘুমের মানে প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞের মতামত
অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্ল্যাটফর্ম পুশ হেলথের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সার্টিফায়েড ইমার্জেন্সি চিকিৎসক চেরাগ শাহের বরাত দিয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইন, ভেজা চুল ও সর্দির মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। তবে দীর্ঘক্ষণ ভেজা চুল রাখলে মাথার ত্বকে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ভেজা চুল এড়ানোর টিপস:
- চুল ধোয়ার পর শুকানোর জন্য মাইক্রোফাইবার তোয়ালে ব্যবহার করুন।
- সম্ভব হলে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করুন।
- ঘুমানোর আগে চুল সম্পূর্ণ শুকিয়ে নিন।
শেষ কথা
ভেজা চুলে ঘুমানো সর্দি-কাশির কারণ নয়। সর্দি মূলত ভাইরাস সংক্রমণের ফলে হয়। তবে চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং অস্বস্তি এড়াতে চুল শুকিয়ে নেওয়া সবসময়ই ভালো।